প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম একবার এক মেয়ে অন্য এক ছেলের সাথে ভেগে যায়, তারপর তার পিতা-মাতা তাকে অনেক মারধর করে এবং পরবর্তীতে অঙ্গীকার করে যে, এরকম আর হবে না। কিন্তু দুঃখজনক ভাবে সে ৪ বছর (১ম বার ভাগে ১৪ বছর বয়সে এবং ২য় বার ১৮ বছর বয়সে) পর সেই ছেলের সাথে আবার ভেগে গিয়ে বিয়ে করে (মেয়ের মা-বাবা বিয়েতে মোটেই রাজী ছিল না কিন্তু ছেলের পিতা-মাতা রাজী ছিল এবং ছেলেরা একক পক্ষ বিয়ে করায়)। মেয়ের মা-বাবা ছোট থেকে এত কষ্ট করে মেয়েকে বড় করলেন আর শেষমেষ এই মা-বাবার জন্য এত বড় আঘাত যা সহ্য করার মতো নয়। কারণ উক্ত পরিবারটি ইসলামিক আইন অনুযায়ী পরিচালিত হওয়ার চেষ্টা করছে। একদিকে মানুষের কটুক্তি যে- বলে হুজুরদের মেয়ে ভেগে যায়। উক্ত ছেলের পরিবার মোটই ভাল নয় যেকোন মুহুর্তে মেয়েটিকে তালাক/বাপের বাড়ী পাঠিয়ে দিতে পারে। আমার প্রশ্ন হলো- এত বড় আঘাত সত্তেও যদি মেয়েটি বাবার বাড়ী আসে তাহলে মেয়েটিকে ঘরে ঢুকতে না দেয়ায় কোন অসুবিধা হবে কি ? কারণ মা-বাবার ইচ্ছা ঐ মেয়েটির সাথে আর কোন সম্পর্ক রাখবে না।

উত্তর :

ওয়া আলাইকুমুস সালাম
দ্বীনী দিক দিয়ে ছেলে মেয়ের পরিবারের সমকক্ষ বা তাদের চেয়ে উত্তম না হলে অথবা শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণযোগ্য অন্য কোন দিক দিয়ে সমতা বজায় না থাকলে এবং পিতামাতা নারায থাকলে উক্ত বিবাহ সংঘটিত-ই হয়নি। তাই উক্ত মেয়ের জন্য ঐ ছেলের সাথে ঘর সংসার করা সম্পূর্ণ নাজায়েয ও হারাম। সেক্ষেত্রে পিতামাতা উক্ত মেয়ের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারেন। তবে সে উক্ত ছেলেকে ছেড়ে পূর্বের গোনাহের জন্য খালেছভাবে তাওবা করে লজ্জিত হয়ে ফিরে এলে পিতামাতার জন্য সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত হবে না। আর যদি উক্ত ছেলেকে ছেড়ে আসে তবে নিজেকে সংশোধন করেনি সেক্ষেত্রে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার দ্বারা যদি সে সংশোধন হয় তবে সম্পর্ক ছিন্ন করবে। সারকথা এক্ষেত্রে যখন সে গোনাহের উপর অটল থাকে অথবা সম্পর্ক ছিন্ন করা কল্যাণকর হয় তখন সম্পর্ক ছিন্ন করবে।–রদ্দুল মুহতার ৩/৫৭; ফাতওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ, অনলাইন ফাতওয়া নং ৫৪০০২, ১৫১৪৫০

উল্লেখ্য যে, ছেলে মেয়ে পরিণত বয়সে পৌঁছালে তাদের বিবাহের সুব্যবস্থা করা জরুরী। প্রশ্নের বর্ণনা থেকে এ ব্যপারে পিতামাতার শিথিলতা স্পষ্ট। মেয়েটি যখন একবার চলে গিয়েছিল তাই পরবর্তীতে তাকে সুবিধামত দ্রুত বিবাহ দেওয়া প্রয়োজন ছিল।

Loading