আল্লাহ তাআলা যে চারটি মাস সম্মানিত করেছেন তার মধ্যে যিলহজ্ব মাস আন্যতম। আবার এই যিলহজ্বের প্রথম দশ দিনেরে গুরুত্ব ও ফযীলত অপরিসীম।
আল্লাহ তাআলা যিলহজ্বের প্রথম দশের রাতের কসম খেয়েছেন-
وَالْفَجْرِ وَلَيَالٍ عَشْرٍ
অর্থঃ শপথ ভোরবেলার, শপথ দশ রাত্রির।-সূরা ফজর :১-২

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) সহ অধিকাংশ মুফাসসিরীনে কেরামের মতে উল্লেখিত আয়াতে দশ রাত্রি দ্বারা যিলহজ্ব মাসের প্রথম দশ রাতকেই বুঝানো হয়েছে।আর হাফেজ ইবনে কাসীর (রহঃ) এটাকেই বিশুদ্ধ মত হিসাবে অভিহিত করেছেন।-তাফসীরে ইবনে কাসীর ৪/৫৩৫-৫৩৬

এছাড়াও আরও বিভিন্ন হাদীসে এই দশকের ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। এজন্য কোন কোন আলেমের মতে রমযানের শেষ দশকের চেয়েও যিলহজ্বের প্রথম দশকের ফযীলত বেশি । নিম্মে এই দশকের ফযীলত সম্বলিত কয়েকটি হাদীস পেশ করা হল-
مَا مِنْ أَيَّامٍ الْعَمَلُ الصَّالِحُ فِيهَا أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ مِنْ هَذِهِ الْأَيَّامِ يَعْنِي أَيَّامَ الْعَشْرِ، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَلَا الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ؟ قَالَ: وَلَا الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، إِلَّا رَجُلٌ خَرَجَ بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ، فَلَمْ يَرْجِعْ مِنْ ذَلِكَ بِشَيْءٍ.
১। আল্লাহ তাআলার নিকট যিলহজ্বের দশ দিনের নেক আমলের চেয়ে অধিক প্রিয় অন্য কোন দিনের আমল নেই। সাহাবায়ে কেরাম বললেন,ইয়া রাসূলাল্লাহ !আল্লাহর রাস্তার জিহাদও এর চেয়ে উওম নয়? তিনি বললেন, না,আল্লাহর রাস্তার জিহাদও নয়।তবে ঐ ব্যক্তির জিহাদ এই দশ দিনের আমলের চেয়ে উরম,যে নিজের জান মাল নিয়ে আল্লাহর রাস্তার জিহাদে বের হয়েছে,অতঃপর কোন কিছুই নিয়ে ফিরে আসেনি ।-সুনানে আবূ দাউদ,হাদীস নং২৪৩৮,সহীহ বুখারী,হাদীস নং ৯৬৯ ।
عن جابر قال رسول الله صلي الله عليه و سلم أَفْضَلُ أَيَّامِ الدُّنْيَا أَيَّامُ الْعَشْرِ، عَشْرِ ذِي الْحِجَّةِ، قَيلَ: وَلَا مِثْلُهُنَّ فِي سَبِيلِ اللَّهِ؟ قَالَ: لَا مِثْلُهُنَّ فِي سَبِيلِ اللَّهِ , إِلَّا رَجُلٌ عَفَّرَ وَجْهَهُ فِي التُّرَابِ.
২। অর্থঃ হযরত জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,দুনিয়ার সর্বোত্তম দিনগুলো হল যিলহজ্বের দশ দিন । প্রশ্ন করা হল আল্লাহর রাস্তার জিহাদও কি তার সমতুল্য নয় ?তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তার জিহাদও তার সমতুল্য নয়। তবে ঐ ব্যক্তি,যার চেহারা ধুলিযুক্ত হয়েছে ।(অর্থাৎ যে শাহাদাত লাভ করেছে তার জিহাদ এই দশকের আমলের চেয় উত্তম )- মুসনাদে বাযযার হাদীস নং ১১২৮

উপরে উল্লেখিত আয়াত এবং হাদীসদ্বয় দ্বারা যিলহজ্বের প্রথম দশকের গুরুত্ব ও ফযীলত দিবালোকের ন্যয় স্পষ্ট হয়ে উঠে। এমনকি দ্বীনের সবচেয়ে উচু একটি আমল আল্লাহর রাস্তার জিহাদ,ক্ষেএবিশেষে এই দশ দিনের আমল তার চেয়েও উত্তম হয়ে থাকে । আসলে সব কিছুর একটা সিজন থাকে । আল্লাহ তাআলাও বান্দার অধিক পরিমানে ছাওয়াব অর্জন ও নৈকট্য লাভের জন্য বেশ কিছু সিজন করে দিয়েছেন । যাতে বান্দা এ সুযোগ যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারে ।তাই আমাদের এই দিনগুলো যথাযথভাবে কাজে লাগানোর র্সবাত্তক প্রচেষ্টা চালাতে হবে । আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তৌফীক দান করুন । আমীন !

এই দশদিনের বিশেষ আমলসমূহঃ

১। বেশী বেশী যিকির করাঃ
বেশী বেশী সুবহানাল্লাহ,আল-হামদুলিল্লাহ,লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং আল্লাহু আকবার পাঠ করা । হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত,রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন-
ما من أيام أعظم عند الله ولا أحب إليه من العمل فيهن من هذه الأيام العشر فاكثروا فيهن من التهليل والتكبير والتحميد
অর্থঃআল্লাহ তাআলার নিকট আশারায়ে যিলহজ্বের আমলের চেয়ে অধিকমহৎ এবং অধিক প্রিয় অন্য কোনোদিনের আমল নেই।সুতরাং তোমরাসেই দিবসগুলোতে অধিক পরিমাণে তাহলীল(লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ), তাকবীর(আল্লাহু আকবার)ও তাহমীদ(আলহামদুলিল্লাহ) পাঠ কর।
ত্বাবারানী,হাদীস নং ১১১১৬,মুসনাদে আহমদ ,হাদীস নং ৫৪৪৬
২। চুল,নখ,মোচ ও অন্যান্য পশম না কাটাঃ
যারা কুরবানী করবে তাদের যিলহজ্বের ১ তারিখ তথা যিলক্বদের শেষ দিনের সূর্যাস্ত থেকে ১০যিলহজ্বের কুরবানীর পূর্ব পযন্ত চুল,নখ,মোচ ও অন্যান্য পশম না কাটা। উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্নিত-
أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِذَا رَأَيْتُمْ هِلَالَ ذِي الْحِجَّةِ، وَأَرَادَ أَحَدُكُمْ أَنْ يُضَحِّيَ، فَلْيُمْسِكْ عَنْ شَعْرِهِ وَأَظْفَارِهِ.
অর্থঃ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,যখন যিলহজ্বের দশক শুরু হবে তখন তোমাদের মধ্যে যে কুরবানী করবে সে যেন তার চুল নখ না কাটে।-সহীহ মুসলিম,হাদীস ১৯৭৭;জামে তিরমিযী,হাদীস ১৫২৩

অনুরুপভাবে যারা কুরবানী করতে সক্ষম নয় তারাও এগুলো কাটা থেকে বিরত থাকবে। এর দ্বারা তারাও পরিপূর্ন কুরবানীর ছাওয়াব পাবে ইনশাআল্লাহ্। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্নিত-
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِرَجُلٍ: أُمِرْتُ بِيَوْمِ الْأَضْحَى عِيدًا جَعَلَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لِهَذِهِ الْأُمَّةِ، فَقَالَ الرَّجُلُ: أَرَأَيْتَ إِنْ لَمْ أَجِدْ إِلَّا مَنِيحَةً أُنْثَى أَفَأُضَحِّي بِهَا؟ قَالَ: لَا، وَلَكِنْ تَأْخُذُ مِنْ شَعْرِكَ، وَتُقَلِّمُ أَظْفَارَكَ، وَتَقُصُّ شَارِبَكَ، وَتَحْلِقُ عَانَتَكَ، فَذَلِكَ تَمَامُ أُضْحِيَّتِكَ عِنْدَ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ.
অর্থঃ আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,আমাকে কুরবানীর দিবসে ঈদ (পালনের) আদেশ করা হয়েছে। যা আল্লাহ এ উম্মতের জন্য নির্ধারণ করেছেন। এক সাহাবী আরজ করলেন,ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি আমার কাছে শুধু একটি মানীহা থাকে (অর্থাৎ অন্যের থেকে নেওয়া দুগ্ধ দানকারী উটনী) আমি কি তা কুরবানী করতে পারি? নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,না,তবে তুমি চুল,নখ ও মোঁচ কাটবে এবং নাভীর নিচের পশম পরিষ্কার করবে। এটাই আল্লাহর দরবারে তোমার পূর্ণ কুরবানী বলে গণ্য হবে।-সুনানে আবু দাউদ,হাদীস ২৭৮৯;সুনানে নাসায়ী,হাদীস ৪৩৬৫।

মোটকথা, কুরবানীদাতা এবং কুরবানী করতে অক্ষম উভয়েই এই দশকে চুল, নখ ইত্যাতি কাটবে না। কুরবানীদাতার জন্য তা সুন্নত এবং কুরবানী করতে অক্ষম ব্যক্তি এর দ্বারা একটি পরিপূর্ণ কুরবানীর ছাওয়াব পাবে। তবে কুরবানীদাতার জন্য এটা একটা তাকীদপূর্ন সুন্নাত।
উল্লেখ্য যে,এই আমল করতে হলে যিলকদের শেষ দিকে চুল,নখ ইত্যদি কেটে নিবে অন্যথায় তা অনেক বড় হয়ে যাবে যা খিলাফে সুন্নাত।
৩।যিলহজের প্রথম নয় দিন রোজা রাখাঃ
এই দশকের আরেকটি গুরুত্তপূর্ন আমল হল প্রথম নয় দিন রোজা রাখা। হাদীস শরীফে বর্নিত আছে-
كان رسول الله -صلى الله عليه وسلم- يصوم تسع ذى الحجة ويوم عاشوراء وثلاثة أيام من كل شهر أول اثنين من الشهر والخميس.

অর্থঃ রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিলহজের প্রথম নয় দিন, আশুরার দিন, প্রতি মাসে তিন দিন এবং মাসের প্রথম সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখতেন।- সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং-২৪৩৯।
অন্য আরেকটি হাদীসে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
ما من أيام أحب إلى الله أن يتعبد له فيها من عشر ذي الحجة يعدل صيام كل يوم منها بصيام سنة وقيام كل ليلة منها بقيام ليلة القدر(قلت وان كان في سنده مقال لكنه صالح للعمل)
অর্থঃ যিলহজের দশ দিনের চেয়ে অধিক প্রিয় এমন কোন দিন আল্লাহর নিকট নেই। যে দিন আল্লাহ তাআলা তার জন্য ইবাদত করা পছন্দ করেন। এই দিনগুলোর প্রতি দিনের রোযা এক বছর রোযা রাখার সমান। এবং প্রতি রাতের নামাজ লাইলাতুল কদরের নামাজের সমান।– জামে তিরমিযী হাদীস নং ৭৫৮।
বিষেশ ভাবে নয়ই যিলহজ রোযা রাখাঃ
যিলহজের নয় তারিখে রোযা রাখা মুস্তাহাব ।এই দিন রোযা রাখলে আল্লাহ তাআলা পূর্বের ও পরের মোট দুই বছরের গোনাহ মাফ করে দিবেন। হযরত আবু কাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ، أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ، وَالسَّنَةَ الَّتِي بَعْدَهُ.
অর্থঃ আরাফার দিন (নয় যিলহজ্ব) রোযার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী,তিনি এর দ্বারা এর আগের এক বছরের এবং পরের এক বছরের গুনাহ মাফ করে দিবেন।-সহীহ মুসলিম,হাদীস ১১৬২;জামে তিরমিযী, হাদীস ৭৪৯;সুনানে আবু দাউদ,হাদীস ২৪২৫।
তবে হাজিদের জন্য এই দিন রোজা না রাখা মুস্তাহাব।- সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২৩ ।
মাসআলাঃ কুরবানীর দিন ও তার পরে তিন দিন রোজা রাখা হারাম।
৪। এই দশকের রাতগুলোতে সাধ্যমত ইবাদত করাঃ
এই রাতগুলোতে বেশী বেশী নামাজ,তেলাওয়াত,জিকির ও তাসবীহ-তাহলীল পড়া। একাধিক হাদীসে এই রাতগুলোর বিশেষ ফযীলত বর্নিত হয়েছে।-শুআবুল ঈমান হাদীস নং ৩৭৫৮।
৫।তাকবীরে তাশরীক পড়াঃ
মাসআলাঃ নয় যিলহজ ফজর থেকে ১৩ যিলহজ আছর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর তাকবীরে তাশরীক পড়া ওয়াজিব। পুরুষ- মহিলা,মুকীম-মুসাফির, একাকি নামায পড়া ব্যক্তি ও জামাতে নামায পড়া ব্যক্তি সকলের উপরেই ওয়াজিব। তাকবীরে তাশরীক এই-
الله أكبر، الله أكبر، لا إله إلاالله والله أكبر، الله أكبر ولله الحمد
মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা,হাদীস ৫৬৯৬-৯৯; রদ্দুল মুহতার ২/১৭৭

মাসআলাঃ তাকবীরে তাশরীক একবার পড়তে হয় তিন নয়।

মাসআলাঃ পুরুষদের জন্য তাকবীরে তাশরীক উচ্চসরে পড়া ওয়াজিব। আস্তে পড়লে এ ওয়াজিব পরিপূর্ণভাবে আদায় হবে না। মহিলারা নিম্ম আওয়াজে পড়বে। -রদ্দুল মুহতার ২/১৭৮।

মাসআলাঃ ইমাম তাকবীর বলতে ভুলে গেলে মুকতাদীগন নিজেরাই শুরু করবে। ইমামের জন্য অপেক্ষা করবে না।

মাসআলাঃ তাকবীরে তাশরীক পড়তে ভুলে গেলে এর কোন কাফফারা নেই। পরে শুধু ইস্তেগফার করবে।
মাসআলাঃ প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর কথা-বার্তা বা অন্য কোন কাজ শুরু করার আগেই তাকবীরে তাশরীক পড়বে। এমনকি হাজীগন আগে তাকবীরে তাশরীক পড়বে অতঃপর তালবিয়া পড়বে। তাকবীর পড়তে বেশী দেরি হয়ে গেলে তাকবীরের হক আদায় হবে না।

মাসআলাঃ তাকবীরে তাশরীকের ২৩ ওয়াক্তের কোন ওয়াক্তের নামাজ কাজা হয়ে গেলে এবং তা এই ২৩ ওয়াক্তের মধ্যেই আদায় করলে কাজা নামাজের পরও তাকবীরে তাশরীক পড়বে। পরে পড়লে তাকবীর বলবে না।
৬। ঈদের রাত্রে জাগরন ও ইবাদত বন্দেগী করাঃ
عن أبي أمامة عن النبي صلى الله عليه و سلم قال ” من قام ليلتي العيدين محتسبا لله لم يمت قلبه يوم تموت القلوب”
(و قال النووي في الاذكار ما نصه “اعلم أنه يُستحبّ إحياء ليلتي العيدين بذكر اللّه تعالى والصلاة وغيرهما من الطاعات للحديث الوارد في ذلك : ” مَنْ أَحْيا لَيْلَتي العِيدِ لَمْ يَمُتْ قَلْبُهُ يَوْمَ تَمُوتُ القُلُوبُ ” ورُوي ” مَنْ قَامَ لَيْلَتي العِيدَيْنِ لِلَّهِ مُحْتَسِباً لَمْ يَمُتْ قَلْبُهُ حينَ تَمُوتُ القُلُوبُ ” هكذا جاء في رواية الشافعي وابن ماجه وهو حديث ضعيف رويناه من رواية أبي أمامة مرفوعاً وموقوفاً، وكلاهما ضعيف، لكن أحاديث الفضائل يُتسامح فيها كما قدّمناه في أوّل الكتاب”)

অর্থঃ হযরত আবু উমামা (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাত্রি আল্লাহর নিকট ছাওয়াবের আশায় জাগরন করবে (ইবাদত বন্দেগীতে কাটাবে) তার অন্তর মরবে না যেদিন সমস্ত অন্তর মারা যাবে।
অথচ এই দুই রাত প্রায়ই উদাসীনতায় কেটে যায়। এই দুই রাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করা যাতে এর সঠিক মুল্যায়ন করা যায়। রাত্রে নামাজ, তেলাওয়াত, ইস্তেগফার, জিকির আযকার ইত্যাদি করা যায়।
৭। কুরবানী করাঃ
যারা নেসাবের মালিক তাদের জন্য কুরবানী করা ওয়াজিবز কুরবানীর জন্য আকেল বালেগ হওয়া শর্ত। হযরত যায়েদ বিন আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত-
قُلْتُ أَوْ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا هَذِهِ الْأَضَاحِيُّ قَالَ سُنَّةُ أَبِيكُمْ إِبْرَاهِيمَ قَالُوا مَا لَنَا مِنْهَا قَالَ بِكُلِّ شَعْرَةٍ حَسَنَةٌ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ فَالصُّوفُ قَالَ بِكُلِّ شَعْرَةٍ مِنْ الصُّوفِ حَسَنَةٌ

অর্থঃ সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এই কুরবানী কি?রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটা তোমাদের পিতা ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম এর সুন্নাত। তারা বললেন, এতে আমাদের জন্য কি লাভ রয়েছে? তিনি বললেন এর (কুরবানীর পশুর) প্রতিটি চুলের বিনিময় ছাওয়াব রয়েছে। তারা বললেন হে আল্লাহর রাসূল! পশম! (এর বিনিময় কি লাভ?)তিনি বললেন, প্রতিটি পশমের বিনিময়ে ছাওয়াব রয়েছে।- মুসনাদে আহমাদ হাদীস নং ১৯২৮৩
৮।হাজী সাহেবদের ইস্তেকবাল করাঃ
যিলহজ মাসের আর একটি আমল হল, বাইতুল্লাহর যিয়ারত কারীদের তাদের নিজ ঘরে ফেরার পূর্বে ইস্তেকবাল করা এবং তাদের কাছে নিজের ইস্তেগফারের দুআ চাওয়া। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

إِذَا لَقِيتَ الْحَاجَّ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ وَصَافِحْهُ وَمُرْهُ أَنْ يَسْتَغْفِرَ لَكَ قَبْلَ أَنْ يَدْخُلَ بَيْتَهُ فَإِنَّهُ مَغْفُورٌ لَهُ

অর্থঃ যখন তুমি (আল্লাহর ঘর থেকে আগমন কারী ) কোন হাজীর সাক্ষাত করবে তখন তার নিজ ঘরে প্রবেশের পূর্বেই তাকে সালাম দিবে এবং তার সাথে মুসাফাহা করবে। আর তোমার জন্য তাকে ইস্তেগফার করতে বলবে। নিশ্চয়ই সে ক্ষমাপ্রাপ্ত।- মুসনাদে আহমাদ হাদীস নং ৬১১২

Loading