প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম, হুজুর। আমার পারিবারিক ভাবে একজনের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের অর্থাৎ কবুল পড়ানোর ৩/৪ মাস আগে কাবিন করে রাখা হয়েছিলো। ইজাব কবুল এর আগ পর্যন্ত আমাদের দেখা সাক্ষাৎ বা কথাবার্তা হত না।বিয়ের কিছুদিন পর আমার স্বামীর আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। তখন থেকে আমার বাবা-মা আমাকে স্বামী তালাক করতে বলছে। আমাকে দিয়ে স্বামী তালাক করিয়ে অন্যত্র বিবাহ দিতে চায়। আমি আমার স্বামীকে তালাক দিতে চাই না।তার সাথেই সংসার করতে চাই। বর্তমানে আমি বাবার বাড়িতে আছি। আমাকে স্বামীর বাড়িতে যেতে দিচ্ছে না বা স্বামীর সাথে যোগাযোগ করতে দিচ্ছে না।কাবিননামা লেখার সময় আমার স্বামীকে জিজ্ঞেস করা হয়নি যে, সে আমাকে তালাক দেবার অধিকার দিচ্ছে কিনা।কাবিননামা লেখার সময় শুধু আমাদের দুইজনের স‌ই নেয়া হয়।সম্ভবত কাবিননামায় আমাদের স‌ই নেবার পর কাজী সাহেব পুরো কাবিন নামার ফর্ম পূরণ করে।কারন আমি স‌ই করার সময় দেখেছিলাম, কাবিননামার যেখানে স্বামী স্ত্রীকে তালাক দেবার অধিকার দেয় সেই ঘর ফাঁকা ছিলো।আর কাবিননামা লেখা হয়েছিলো বিয়ের ৩/৪ মাস আগে।আমি গোপনে আমার এক ছোট ভাই এর মাধ্যমে এক মুফতির কাছ থেকে শুনেছি, “”স্বামী স্ত্রীকে তালাক দেবার অধিকার না দিলে স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিতে পারে না।বা বিয়ের আগে কাবিন নামা লেখা হলে সেই কাবিননামার ক্ষমতাবলে স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিতে পারে না।এই ভাবে তালাক দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করলে নতুন স্বামীর সাথে বিয়ে শুদ্ধ হবে না,বরং যেনা করা হবে। “‘এই কথা আমার বাবাকে বললে উনি বলেন,”‘ওই ফকিরের বাচ্চার সাথে সংসার করার জন্য তুই এইসব মিথ্যা বলছিস।মেয়েরা স্বামীকে তালাক দিতে পারে।”‘আমাকে প্রচন্ড মানসিক চাপ দিচ্ছে, কি ধরনের চাপ সেটা বলতে পারবো না।পরে আমার বাবা রাজী হয় যে,যদি কোন ভালো মুফতি এই ফতোয়া দেয়, তাহলে উনি মেনে নেবেন এবং আমাকে আমার স্বামীকে তালাক দেবার জন্য আর চাপ দিবেন না বরং আমার স্বামীর সাথে সংসার করতে দেবেন।হুজুর, এখন আমার প্রশ্ন আমি স্বামী তালাক করলে তাকি গ্রহণযোগ্য হবে ইসলামী শরীয়ত মতে?আমি এই উত্তর আমার বাবাকে দেখাবো ।এই ফতোয়ার ওপর আমার জীবনের অনেক কিছু নির্ভর করছে।দয়া করে, সঠিক ফতোয়া দিন এবং আমার সংসার ভাঙনের হাত হতে রক্ষা করুন এবং আমাকে যেনা কারিনি হ‌ওয়া থেকে রক্ষা করুন।

উত্তর :

ওয়া আলাইকুমুস সালাম

প্রিয় দ্বীনী বোন, প্রথমে আমি ক্ষমাপ্রার্থী উত্তর দিতে বেশ বিলম্ব হওয়ায়। আসলে সাইটটি বারবার হ্যাকারদের কবলে পড়ার কারনে উত্তর দেওয়ার কোন অবস্থা ছিল না।

প্রশ্নের বর্ণনা মতে যদি দুজন সাক্ষীর সামনে ঈজাব কবূলের পূর্বেই আপনাদের কাবিননামা লিখা হয়ে থাকে অথবা আপনার স্বামী কাবিননামায় সাক্ষর করার সময় ১৮ নং ঘর আসলেই ফাঁকা থেকে থাকে এবং তিনি পরবর্তীতে আপনাকে তালাক গ্রহনের ক্ষমতা মৌখিকভাবে না দিয়ে থাকেন তাহলে আপনি নিজের নফসের উপর তালাক গ্রহন করতে পারবেন না। তাছাড়া বিবাহ হয়ে যাবার পর শুধু স্বামীর অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে আপনার পিতা তালাকের জন্য যে পিড়াপিড়ি করছে তা খুবই অন্যায়।

উল্লেখ্য যে, স্ত্রী কখনো স্বামীকে তালাক দিতে পারে না। বরং স্বামী স্ত্রীকে তালাক গ্রহনের ক্ষমতা দিয়ে থাকলে সে ক্ষমতাবলে স্ত্রী শুধু নিজের নফসের উপর তালাক গ্রহন করতে পারে। অর্থাৎ তালাকের খেত্র হল স্ত্রী।–রদ্দুল মুহতার ৩/২৪২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪২০

Loading