বাংলাদেশের জমি উশরী না খারাজী , বর্তমানে এব্যপারে সিদ্ধান্ত দেওয়া অত্যন্ত জটিল বরং অসম্ভব। এ দেশকে উলামায়ে কেরাম একসময় দারুল হরব বলে ঘোষনা করেছিলেন। এদিক দিয়ে বিবেচনা করলে বাংলাদেশের জমি উশরী বা খারাজী কোনটিই হতে পারে না।

তবে ফিকহী দৃষ্টিকোন থেকে বিবেচনা করলে বুঝে আসে উক্ত হুকুম ঐ সকল দারুল হরব সম্পর্কে, যা পূর্বে থেকে দারুল হরব ছিল। আর আমাদের দেশ পূর্বে দারুল হরব ছিল না। বরং আটশত বছর দারুল ইসলাম থাকার পর দারুল হরব হয়েছিল। কজেই উক্ত হুকুম আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য হবে না। আবার ইংরেজরা এদেশের ক্ষমতা দখলের পর যে সমস্ত জমি মুসলমানদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে তাদের মালিকানা বাতিল করে হিন্দুদেরকে জমিদারী প্রদান করেছিল, ঐসকল জমিও উশরী নয়। তবে এধরনের জমি খুজেঁ বের করাও কঠিন। এক্ষেত্রে উলামায়ে কেরামের সিদ্ধান্ত হল যে সকল জমি ধারাবাহিক ভাবে মুসলমানদের মালিকানায় চলে আসছে বলে প্রমান পাওয়া যায় সেগুলোকে উশরী ধরে উশর আদায় করবে।

আর যে সকল জমির ক্ষেত্রে জানা যায় যে, উক্ত জমি বিধর্মীর হাত থেকে মুসলমানদের হাতে এসেছে তবে তা খারাজী হিসাবে গন্য হবে এবং তার খারাজ আদায় করবে। যা প্রতিবছর একবার বর্তাবে। যদি উল্লে¬খিত সূরত জানা না যায় বা সন্দেহ হয় তবে সতর্কতা হিসাবে উশর আদায় করবে।

মাসআলাঃ জমির সেচ বৃষ্টির পানিতে সম্পন্ন হলে দশ ভাগের এক ভাগ উশর আদায় করবে। আর নিজ খরচে সেচ দিলে ফসলের বিশ ভাগের এক ভাগ উশর আদায় করবে।

মাসআলাঃ সেচ ব্যতীত অন্যান্য খরচের দ্বারা উশরের পরিমানে কোন তারতম্য হবে না। অর্থাৎ বৃষ্টির পানিতে সেচ হলে অন্যান্য খরচ (যেমন সারের খরচ, কৃষক খরচ ইত্যাদি ) যত বেশীই হোক না কেন তা ধর্তব্য হবে না। বরং দশ ভাগের এক ভাগ উশর দিতে হবে।
মাসআলাঃ উশরের সম্পর্ক ফসল ফলার সথে। কাজেই জমিতে ফসল না হলে বা চাষ না করলে উশর দিতে হবে না।
মাসআলাঃ জমিতে ফসল হোক বা না হোক খারাজ সর্বাবস্থায় দিতে হবে।

মাসআলাঃ আমাদের দেশে সরকারের পক্ষ থেকে জমির যে খাজনা নেওয়া হয়, এর দ্বারা উশর আদায় হবে না। বরং ভিন্ন ভাবে আদায় করতে হবে। তবে সরকারী খাজনা দেওয়ার সময় দাতা যদি খারাজের নিয়ত করে তবে এর দ্বারা খারাজ আদায় হয়ে যাবে।

মাসআলাঃ যাকাত যাদেরকে দেওয়া যায় তাদেরকে উশর দেওয়া যায়।

Loading