প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম, ঈদ মুবারক, প্রথম প্রশ্নঃ আমার আয় সীমিত, সংসারের চাহিদা মিটাতে আমার স্ত্রী বাসায় থেকে জন্মদিন, বিবাহ বার্ষিকী, গায়ে হলুদ ইত্যাদি অনুষ্ঠানের জন্য কেক তৈরীর কাজ করেন। এখানে উল্লেখ্য যে, এই ব্যাবসায় কেক তৈরীর সরঞ্জাম ও কাচামাল বাবদ টাকা ইনভেষ্ট করা আছে। হুজুরের নিকট প্রশ্ন কেক তৈরীর ব্যবসা ইসলামের দৃষ্টিতে হালাল হব‌ে কি? দ্বিতীয় প্রশ্নঃ আমার একটি ৫০০ টাকার ডিপিএস ছিল, প্রায় ৫ বছর ধরে সুদ সহ ৩৭০০০ (প্রায়) টাকা জমা হয়। সুদ এর কারবারের সাথে জড়িত না থাকত‌ে চাওয়ায় এই রমজানে ডিপিএসটি ভাঙ্গি এবং আসল টাকা ব্যতীত সুদের টাকাসমূহ আমার বাবার ঋণ এর সুদ হিসাবে প্রদান করি। পরবর্তীতে সঞ্চয়কৃত ৩০০০০ টাকা আমার সন্তানের পড়াশুনার জন্য নিজেদের কাছে রেখে দেই। আর এই টাকার বিপরীতে এক জন হুজুরের পরামর্শে যাকাত দেই। আপনার সাইটের তথ্য আনুযায়ী আমার জমানো টাকার অঙ্ক নেসাব পরিমানের চেয়ে কম। জনাবের নিকট প্রশ্ন আমার প্রদানকৃত যাকাত এর টাকা পরবর্তীতে প্রদানযোগ্য যাকাতের সাথে সমন্বয় করা যাবে কি না? আর, সুদের টাকা অন্য ঋণের সুদ হিসাবে দেওয়া যায় কি না? আপনার উত্তর প্রাপ্তি অতীব জরুরী।

উত্তর :

ওয়া আলাইকুমুস সালাম
১। জন্মদিন, বিবাহ বার্ষিকী, গায়ে হলুদ ইত্যাদি অনুষ্ঠান পালন করা শরীয়তের দৃষ্টিতে নাজায়েয। তাই জেনেশুনে এসকল অনুষ্ঠানের জন্য কেক তৈরী করে দেওয়া মাকরূহ। এর দ্বারা তো অনৈসলামিক রীতিনীতিকে উৎসাহিত ও সহযোগিতা করা হয়। কোন মুমিনের জন্য এ ধরণের পেশা শোভনীয় নয়।
তবে সাধারণভাবে খাওয়ার কেক বানিয়ে বিক্রি করাতে কোন অসুবিধা নেই। অনুরূপভাবে ঐসকল অনুষ্ঠানের কথা না জেনে বিক্রি করলেও কোন অসুবিধা নেই।- রদ্দুল মুহতার ৪/২৬৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/৯৯; আল বাহরুর রায়েক ৫/২৪০
২। আপনার কাছে নগদ টাকা বলতে কি শুধু ঐ ৩০,০০০ টাকাই রয়েছে? অন্য কোন টাকা স্বর্ণ, রূপা বা ব্যবসার কোন মাল নেই। যদি না থেকে থাকে তবে ঐ টাকা নফল দান হিসেবে গণ্য হবে। তা পরবর্তীতে যাকাত থেকে হিসাব করার সুজোগ নেই। আর যদি যাকাতযোগ্য অন্য কোন সম্পদ থাকে এবং ঐ ৩০,০০০ টাকা সহ তা নেসাব পরিমান হয় তাহলে তা যাকাত হিসেবে আদায় হয়ে গিয়েছে।
আর সূদের প্রাপ্ত টাকা সূদের ঋণ হিসেবে দেওয়া জায়েয হয়নি। ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত সূদী টাকা নিঃশর্তভাবে কোন গরীবকে ছাওয়াবের নিয়ত ছাড়া মালিক বানিয়ে দিতে হয়। তাই উক্ত সূদী টাকা পুনরায় আপনাকে গরীবদেরকে ছাওয়াবের নিয়ত ছাড়া সদকা করতে হবে।
আপনি এক্ষেত্রে এমনটি করতে পারতেন যে, আপনার কোন (গরীব) ভাইকে উক্ত টাকা সদকাহ করতেন আর তিনি তা পিতার ঋণ হিসেবে আদায় করতেন।–আল বাহরুর রায়েক ২/৫২১; মারাকীল ফালাহ, পৃষ্ঠা নং ৭১৪

Loading