প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ জনাব আপনার কাছে একটি অতীব জরুরী সালাত সম্পর্কিত প্রশ্ন ছিল। প্রশ্নের সমাধানটি যদি সহীহ হাদীসের আলোকে দেন তবে আমি সহ অনেক মুসল্লী উপকৃত হবে ইংশাআল্লাহ। প্রশ্নটি হল এই যে, সালাত শুরু হওয়ার পরে যদি কোন মুসল্লী জামাআতে শামিল হয় এবং দেখে যে কাতার পুর্ন হয়ে গেছে তাহলে তার করনীয় কি হবে? সে কি একাকী কাতারের পেছনে দাঁড়াবে নাকি কাউকে পেছনে টেনে নেবে? এবং কোন সাইড থেকে টানবে? আবার পেছনে টেনে নেওয়ার হাদীস যদি থাকে তাহলে বসা অবস্থায় শেষ বৈঠকে কিভাবে টানবে? আবার, কোন কোন হাদীসে বলা হচ্ছে জামাআতে সালাতের যে অবস্থায় পাও সে অবস্থায় সলাত শুরু কর। আবার একাধিক হাদীসে জামাআতের সালাত যে একাকী পেছনে পড়া যাবে না সেটা পাওয়া যাচ্ছে। যেমনঃ সহীহ আবু দাউদ হা নং ৬৮২; সহীহ তিরমিজী ২৩০-২৩১; মিশকাতঃ ১১০৫; ইবনে মাজাহ ১০০৪ ইত্যাদি আরো অনেক হাদীস।

উত্তর :

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
কোন মুসল্লী মসজিদে এসে সামনের কাতার পূর্ণ পেলে তার জন্য মুস্তাহাব হল, সে সামনের কাতার থেকে একজনকে টেনে এনে দুজন মিলে পিছনে কাতার করবে। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে-
قَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم إِنْ جَاءَ رَجُلٌ فَلَمْ يَجِدْ أَحَدًا فَلْيَخْتَلِجْ إِلَيْهِ رَجُلاً مِنَ الصَّفِّ فَلْيَقُمْ مَعَهُ فَمَا أَعْظَمَ أَجْرَ الْمُخْتَلِجِ
অর্থঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যদি কেউ (মসজিদে) এসে (সামনের কাতার পরিপূর্ণ হওয়ায় পিছনে কাতার করার জন্য) কাউকে না পায় তবে সামনের কাতার থেকে একজনকে টেনে এনে তার সাথে কাতার করবে। আর সে টেনে আনার কারনে কতই না ছাওয়াব পাবে।–সুনানে বাইহাকী, হাদীস নং ৫৪১৭; মারাসীলে আবূ দাউদ, হাদীস নং ৮০; ইবনে হাজার আসকালানী, আত তালখীছুল হাবীর ২/১০০

رَأَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً صَلَّى خَلْفَ الصُّفُوفِ وَحْدَهُ فَقَالَ أَيُّهَا الْمُصَلِّى وَحْدَهُ أَلاَ وَصَلْتَ إِلَى الصَّفِّ أَوْ جَرَرْتَ إِلَيْكَ رَجُلاً فَقَامَ مَعَكَ
অর্থঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে কাতারের পিছনে একাকী নামায পড়তে দেখে বললেন, হে একাকী নামাযী ব্যক্তি, তুমি কেন কাতারের সাথে মিলিত হলে না অথবা সামনে থেকে কেন একজনকে টেনে আনলে না? সে তোমার সাথে দাঁড়াত।–সুনানে বাইহাকী, হাদীস নং ৫৪১৬; মুসনাদে আবূ ইয়ালা, হাদীস নং ১৫৮৮

তবে উলামায়ে কেরাম বর্তমান যামানায় সাধারণ মানুষের দ্বীনী অজ্ঞতা ও উদাসীনতার কারনে একাকী দাঁড়ানোকে উত্তম বলেছেন। কেননা এমনটি করলে হয়তোবা যাকে টানা হবে তার নামায নষ্ট হয়ে যাবে পাশাপাশি অনেকের নামাযই নষ্ট হতে পারে।

সারকথা, আগন্তক দেখবে সামনে যিনি আছেন তিনি মাসআলা সম্পর্কে অবগত হলে তাকে টেনে আনবে। তিনি ইমামের বরাবর পিছনে থাকলে তাকেই টানবে। আর কাতারের অন্য কোথাও এমন লোক থাকলে সেখানেই তাকে টেনে ঐ বরাবর পিছনে দাঁড়াবে। তবে যদি (মাসআলা সম্পর্কে অবগত) এমন লোক সামনের কাতারে না পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে আগন্তক (একাকী পিছনের কাতারে দাঁড়ানোর নিষেধাজ্ঞার হাদীসের কারনে) একটু অপেক্ষা করবে। কাউকে পেলে তার সাথে দাঁড়াবে অন্যথায় একাই দাড়িয়ে যাবে।

আর পিছনে টানার ক্ষেত্রে যে কোন অবস্থাতেই (দাঁড়ানো বা বসা অবস্থায়) টানতে পারে। অর্থাৎ যে রোকনে তাকে টেনে পিছনে নিবে তার পরবর্তী রোকন থেকে পিছনে ইমামের ইক্তেদা করতে থাকবে। যেমন যদি রুকূ থেকে উঠার পরে তাকে টেনে নেয় তবে সে পিছনের কাতারে সিজদাহ থেকে আদায় করতে থাকবে।–রদ্দুল মুহতার ১/৫৬৮,৫৭১; আল বাহরুর রায়েক ১/৬১৮; ইলাউস সুনান ৪/৩৫০,৩৫১

Loading