প্রশ্ন : তাবলীগ জামাআত কি কোন হাদীছে আছে?

উত্তর :

তারা মূলত দাওয়াতের কাজ করে। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো সারাটা জীবনই উম্মতের দাওয়াতের কাজে ব্যয় করেছেন। যার সাক্ষ্য কুরআনের অসংখ্য আয়াত ও হাদীস দেয়। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِمَّنْ دَعَا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ
অর্থঃ ঐ ব্যক্তির কথার চেয়ে ভালো কথা আর কার হতে পারে, যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দিয়েছে, সৎ কাজ করেছে এবং বলেছে, আমি অনুগতদের একজন? (সূরা হামীম আসসাজদাহ, আয়াত ৩৩)
অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন-
قُلْ هَذِهِ سَبِيلِي أَدْعُو إِلَى اللَّهِ عَلَى بَصِيرَةٍ أَنَا وَمَنِ اتَّبَعَنِي وَسُبْحَانَ اللَّهِ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ
অর্থঃ বল, এই আমার পথ। আল্লাহর দিকে দাওয়াত দিই বুঝে-শুনে আমি এবং যারা আমার সঙ্গে আছে। আল্লাহ পবিত্র এবং আমি শরীক সাব্যস্তকারীদের অন্তর্ভুক্ত নই। (সূরা ইউসুফ, আয়াত ১০৮)

অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ بَلِّغُوا عَنِّي وَلَوْ آيَةً
অর্থঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, একটি আয়াত হলেও তা আমার পক্ষ থেকে প্রচার কর।–সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ৩৪৬১
অন্য হাদীসে রয়েছে-
عَنْ أَبِى مَسْعُودٍ الأَنْصَارِىِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- مَنْ دَلَّ عَلَى خَيْرٍ فَلَهُ مِثْلُ أَجْرِ فَاعِلِهِ
অর্থঃ হযরত আবু মাসউদ আনসারী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সৎ কাজের পথ দেখায়, সে সৎ কর্মকারীদের সমান সওয়াব লাভ করে।–সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৫১৩১
তাছাড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যতগুলো জিহাদে অংশগ্রহণ করেছেন বা সৈন্যবাহিনী পাঠিয়েছেন সবগুলোর উদ্দেশ্যই ছিল ইসলামকে বুলন্দ করা এবং দাওয়াত। কাজেই উপরোক্ত আয়াত ও হাদীসদ্বয় থেকে স্পষ্টভাবে বুঝে আসে মৌলিকভাবে দাওয়াত ইসলাম প্রচার ও প্রসারের জন্য অত্যন্ত জরুরী।

হ্যাঁ, বর্তমানের দাওয়াত ও তাবলীগের বিশেষ পদ্ধতি ও সূরত যদিও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে ছিল না তবে তাতে শরীয়ত পরিপন্থী কোন কিছু নেই। যেমন বর্তমানের প্রচলিত পদ্ধতিতে মাদরাসা রাসূলের যুগে ছিল না। তাহলে কি মাদরাসা করা ও তাতে পড়াশোনা করাও নাজায়েয হবে? মূলত ইলমের ফজীলাত ও গুরুত্ব কুরআন ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। এখন এটা কেউ রাসূলের যুগের পদ্ধতি ব্যতীত অন্য কোন বিশেষ পদ্ধতিতে অর্জন করলেই নাজায়েয বলা যায় না। রাসূলের যুগে প্লেন ছিল না তাহলে কি প্লেনে জিহাদ করাও নাজায়েয হবে? অনুরূপভাবে দাওয়াত সত্ত্বাগতভাবে অত্যন্ত জরুরী। এখন কেউ বিশেষ কোন পদ্ধতিতে দাওয়াত দিলেই তা নাজায়েয বলা সম্ভভ না যতক্ষণ তাতে শরীয়ত পরিপন্থী কোন কিছু না থেকে থাকে। তাছাড়া বর্তমানের প্রচলিত পদ্ধতিতে দাওয়াতের বিভিন্ন নযীর আল্লাহর রাসূল এবং সাহাবায়ে কেরামের যুগে পাওয়া যায়।

Loading