প্রশ্ন : তিরমিজির ১৬০২ নং হাদিস। হাদীসটি বুঝতে পারছিনা। ইহুদী-নাসারাদের রাস্তায় দেখলে তাদের সংকীর্ণ রাস্তায় দিব এটা অন্যায় হয়ে গেল না?
উত্তর :তিরমিজী শরীফ এর ১৬০২ নং হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে “فاضطرو الى اضيفقه” অর্থাৎ ইয়াহূদী, নাসারেদের সাথে রাস্তায় দেখা হলে তাদেরকে সংকীর্ণ রাস্তায় চাপিয়ে দাও। এর অর্থ হল তাদেরকে গর্বের সাথে চলতে দিও না। তাদের সাথে সাক্ষাৎ হলে তাদের সম্মানে রাস্তা থেকে সরে যেও না এবং প্রশস্ত রাস্তায় তাদেরকে মাঝ রাস্তা দিয়ে চলতে দিও না। বরং রাস্তার কিনারা দিয়ে চলার নির্দেশ দিবে। কেননা যে ব্যক্তি রাস্তার মালিককে বিশ্বাসই করে না সে উক্ত রাস্তায় গর্বের সাথে হাঁটার অধিকারও রাখে না। কাযী ইয়ায (রহঃ) বলেন হাদীসের অর্থ এই নয় যে, তাদেরকে একেবারে দেওয়াল ঘেঁষে ঘেষে চলতে বলবে। বরং এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো তাদেরকে সম্মান না দেখানো এবং সদর রাস্তা দিয়ে চলতে না দেওয়া।
ইমাম কুতুবী রহঃ বলেন তাদেরকে একেবারে দেওয়ালে ঘেষে চলতে বললে তাদেরকে বিনা কারণে কষ্ট দেওয়া হবে। আর এথেকে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে। ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, এক্ষেত্রে খেয়াল রাখবে যেন সংকীর্ণ এত বেশি না হয় যে, সে দেওয়ালে ধাক্কা খায় বা খাদে পড়ে যায়। উক্ত বক্তব্যগুলো দ্বারা বুঝা যায় যে, এর দ্বারা তাদেরকে কষ্ট দেওয়া উদ্দেশ্য নয়। বরং এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো তাদের লাঞ্ছনার কারণ খতিয়ে দেখতে উৎসাহিত করা। আর যেহেতু তারা সীরাতে মুস্তাকিম থেকে সরে গিয়েছে তাই মাঝ রাস্তা থেকে সরে সংকীর্ণ রাস্তায় যাওয়াই হবে তাদের প্রতিদান। এমনটি করা হলে তারা তাদের এ সকল পরিস্থিতি দেখে নিজেদের ভিতর চিন্তা করার খোরাক পাবে। অর্থাৎ সে যদি ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে সে এই দুনিয়াবী অস্থায়ী লাঞ্ছনা ও আখেরাতের স্থায়ী লাঞ্ছনা থেকে বাঁচতে পারবে। এবং এভাবে ইসলাম গ্রহণে আগ্রহী হবে। সার কথা হলো তাকে চিরস্থায়ী লাঞ্ছনা ও ক্ষতি থেকে হেফাজত করার জন্যই শরীয়ত এ ব্যবস্থা রেখেছে।– ইমাম নববী, শরহে মুসলিম ১৪/১৪৭; নাইলুল আওতার ৮/৩৮৮; মিরকাতুল মাফাতিহ ৮/৪৬০; বাজলুল মাজহুদ ১৩/৫৮৯; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ৪/১৫০; ফাতহুল বারী ১১/৪৭