প্রশ্ন : শুরুতেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি খুব বড় করার জন্য। কিন্তু বড় না করলে বোঝানো সম্ভব না। হুজুর মারাত্বক অথবা সর্বনিকৃষ্ট ওয়াসওয়াসার শিকার আমিই। হয়ত আমার মতো এরকম ওয়াসওয়াসা কেউ আক্রান্ত হয়নি। যেদিন থেকে আল্লাহর পথে ভালোভাবে চলতে শুরু করেছি সেদিন থেকে ওয়াসওয়াসা আসা। আসল শিরকের ওয়াসওয়াসা আমি শিরক থেকে বাচার জন্য নেটে শিরক এর উদাহরণসমুহ পড়তাম। তারপর থেকে প্রতিদিনই মনে হতো যে শিরক করছি। পস্রাবের সমস্যা ও অন্যান্য সমস্যা নামাযে পস্রাব ফোটা ফোটা পড়ার সমস্যা ইত্যাদির কারণে এক নামায বার বার আদায় করা অর্ধ গোসল করা ইত্যাদি চলত। পরিবারের লোক অতিষ্ট হয়ে আমাকে মসজিদে যাওয়া কয়েকদিনের জন্য বন্ধ করতে বলল এবং বাড়িতে নামায পড়তে বলল। কিছুদিন বাড়িতে নামায পড়ে বুঝতে পারতেছিলাম মারাত্মকভাবে ঈমান কমতেছে। তারপর পায়ে আঘাত পেলাম। পায়ে আঘাত বাড়িতে শুয়ে শুয়ে অনেকদিন এবং এখন চেয়ারে বসে নামায পড়তেছি। কিন্তু একটা মারাত্মক সমস্যা হয়ে গেছে ঈমান খুব কমে গিয়ে মুনাফিকের কাতারে পৌছে গেছে। নামায পড়তে গেলে রিয়া ও রিয়ার ওয়াসওয়াসার সমস্যা। মানুষের সামনে তো নামায পড়তেই পারি না। একা একা নামাজ পড়তে গেলেও একি সমস্যা ভুল করে এক দুবার রিয়া দুর করতে বা মন অন্যদিকে দেয়ার জন্য হুজুর বা পীরের চেহারা মনে করে ফেলেছিলাম । জানতাম এটা শিরক এবং তারপর থেকেই শুরু নামাযে, জিকিরে সর্বদা হুজুরদের চেহারা ভাসত এবং এটা দুর করতে গিয়ে অন্য চিন্তা করতে গিয়ে আমি ভুলে অন্য হুজুরের চেহারা মনে করে ফেলতাম। নামাযে, জিকিরে রিয়া আসুক বা না আসুক শুধু একটার পর একটা হুজুরের চেহারা ভাসে। দুর করতে গিয়ে আবার আরেক হুজুরের চেহারা চিন্তা করে ফেলি ভুলে। তারপর আবার জানলাম শুধু নামাযে এবং জিকিরে নয় সকল ইবাদত করার সময় হুজুরদের চেহারা চিন্তা করা শিরক। তারপর থেকেই শুরু যেমনঃ বাবা মা কোন একটা কাজ করতে বলতেছে সেটা করতে গিয়ে চিন্তা আসত এটা বাবা মায়ের বাধ্য হওয়া এখানেও হুজুরের চেহারা চিন্তা করলে শিরক এবং বিভিন্ন হুজুরের চেহারা ভাসত এবং এটা দুর করতে গেলে দেখা গেত শয়তানের ফাদে পড়ে আমি শিরক করে ফেলতাম, বাবা মা শুয়ে থাকতে বললে বা ঘুমাতে বললে ঘুমাতে গেলে একই অবস্থা, তারপর তওবা করতে গেলেও একি অবস্থা, নামাযে এমন অবস্থা হইছে আমাকে অনেক আগের দেখা মুভি, সিনেমা, নাটক ইত্যাদি মনে করে নামায পড়ি নইলে এক নামাযে হাজার বার শিরক হয়ে যাবে, বাবা মা পড়তে বসতে বললে, পরীক্ষা দিতে গিয়ে, রাস্তায় হাটাহাটি করতে, কারো সাথে নিজের সমস্যার ব্যাপারে কথা বলতে গেলে এমন যেনো শয়তান আমাকে বোঝাতে যে এভাবে এভাবে এটা তোমার নেক আমল হচ্ছে এবং শুরু হয়ে যেতো এমনকি এই লেখা পাঠাতে গিয়েও একি কাজ বারবার হয়ে গেছে। যদি এড়িয়ে যেতে চাই ওয়াসওয়াসা তাহলে হুজুরের চেহারা সামনে এসে ভাসে এবং শয়তান যেনো এমন বলে তুমি তো হুজুরের থেকে মন না শরিয়ে তার চেহারা চিন্তা করে আমল করেছো তুমি শিরক করেছ। পরবর্তীবার হুজুরের চেহারা থেকে মন সরাতে গিয়ে অন্য হুজুরের চেহারা চিন্তা করে ফেলি। এভাবে শয়তানের ফাদে পড়ে শিরক করে ফেলি। আবার এই এক হুজুরের চেহারা চোখের সামনে আসলে অন্য হুনুরের চেহারা চোখের সাম্নে আসতে গেলে ভুল করে পুনরায় আগের হুজুরের চেহারা চিন্তা করে ফেলি। আবার অবস্থা খুবই মারাত্মক। আল্লাহর রহমতের উপর আমি নিরাশ নই কিন্তু নিজের উপরে একদম হতাশ। আমার মনে হয় আত্বহত্যা ছাড়া পথ নেই। এভাবে চললে এমনিতেই চিরস্থায়ী জাহান্নাম এবং আত্বহত্যার ও একই শাস্তি৷ আমি কোন উপায় পাচ্ছি না। আমাকে দয়া করে কোন সমাধান দিন। আল্লাহ আপনার উপর সন্তুষ্ট হবেন।

উত্তর :

আপনি প্রথমত নিম্নোক্ত লিঙ্কের ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত সকল প্রশ্নোত্তরগুলো (প্রায় ২৯ টিই) পড়ে নিবেন-

http://muftihusain.com/ask_category/%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a6%be/

সারকথা, একটাই, ঐগুলোকে আপনি গুরুত্ব দিবেন না। আর কোন আলেমের চেহারা অনিচ্ছাকৃত সামনে চলে এলে এতে শিরকের কিছুই নেই। হ্যাঁ, নামাযে সামনে চলে এলে অন্য দিকে ঘুরিয়ে নিবেন। এরপরেও না গেলে বা বারবার সামনে এলে কোনই সমস্যা নেই। যাই হোক, আপনি আগে প্রদেয় লিঙ্কের ২৯ টি প্রশ্নোত্তর দেখুন। এরপর একটি একটি করে কোন সমস্যা থাকলে লিখুন। একবারে সবগুলো নয়। আমি আপনার বিষয়টি খুব আন্তরিকভাবে নিলাম। আমি আপনার সাথেই আছি। পেরেশানির কিছুই নেই, সব ঠিক হয়ে যাবে ইংশাআল্লাহ। আগে প্রশ্নোত্তরগুলো দেখুন। আর আরেকটি পরামর্শ হল একসাথে একাধিক আলেমের সাথে পরামর্শ করবেন না।

Loading