প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম হযরত আমার বোনকে তার স্বামী রাগের মাথায় তালাক দেয়। সে কথাটি আমাকে এই ভাবে বলে যে, “আইজকাই আমি আপনার বোইনেরে তালাক দিমু। এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক, হইছে নাকি সবার সামনে কইতে হইবো।” এই মাসআলাটি ফরিদাবাদ মাদ্রাসায় পেশ করা হলে ফতোয়া বিভাগ থেকে তালাক হয়েছে বলে সাব্যস্ত করা হয়। আমরাও মাদ্রাসার ফাতওয়া মেনে নিয়েছি। তার কিছু দিন পর আমার বোনের জামাতা ও পরিবারের লোকজন আমার বোনকে বুঝিয়ে আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায় এবং নতুন করে কাজী ডেকে বিয়ে পড়ায়। যদিও আমরা জানি তার এ বিয়ে হিল্লাহ ছাড়া সহীহ হবে না। কিন্তু আমার বোন এখন তার স্বামীর সাথে সংসার করছে। আমার বোন আমাকে প্রায়ই বলেন এর কোন সমাধান আছে কিনা। আমি এর কোন সমাধান দিতে পারি নাই। যদি আপনি কোন সমাধান দেন তবে কৃতজ্ঞ থাকবো। এখন আপনার কাছে এই ব্যাপারে কয়েকটি প্রশ্ন জানতে চাচ্ছি: ক) আমার বোন যদি তাওবা করে তবে ধরলাম পূর্বের সব গুনাহ মাফ হলো এখন সে আবার যখন তার স্বামীকে দেখা দিবে, তার সাথে একাকিত্ব সময় কাটাবে তখন কি পূনরায় গুনাহ হবে। অর্থ্যাৎ এটাকি এমন গুনাহ যা একজন বেগানা পুরুষের ব্যাপারে হয়? খ) এই গুনাহ এমন কোন তাওবা বা ফিতরা জাতীয় কিছু আছে কি যা দ্বারা মাফ হবে? গ) যদি মাফ না হয় তবে এখন আমার বোনের করণীয় কি? ঘ) হিল্লাহ ব্যাতিত এর কোন সমাধান আছে কি? কারণ আমার বোন হিল্লাহ দিতে চায় না। হুজুর অনুগ্রহ করে উত্তর দিবেন। আমার প্রশ্নটি এড়িয়ে যাবেন না। আল্লাহ তা’য়ালা আপনাকে উত্তম বদলা দিবেন। ইনশাআল্লাহ।

উত্তর :

ওয়া আলাইকুমুস সালাম
(ক) আপনার বোনের জন্য তার প্রাক্তন স্বামী অন্যান্য গাইরে মাহরাম পুরুষের ন্যায় হয়ে গিয়েছে। তার সাথে ঘর সংসার তো দুরের কথা দেখা সাক্ষাৎ সম্পূর্ণ নাজায়েয ও হারাম। আর তাওবা কবূল হওয়ার জন্য শর্ত হল ভবিষ্যতে ঐ গুনাহ না করার পাক্কা ইরাদাহ (ইচ্ছা) করা। কাজেই একসাথে থেকে আপনার বোন যতই তাওবা করুক না কেন তা ফলপ্রসূ হবে না। আর আপনারা ফরিদাবাদ মাদ্রাসার ফাতওয়া মেনে নিলে পুনরায় আপনার বোনকে সেখানে পাঠালেন কেন?
(খ) তার প্রাক্তন স্বামীর সাথে বহাল তবিয়তে সংসার করে এই গুনাহ থেকে পরিত্রাণের কোন সুযোগ নেই।
(গ+ঘ) আপনার বোন যদি তার সাথেই সংসার করতে চায় তবে শরয়ী হালালার কোন বিকল্প নেই। শুনুন, দুনিয়ার কষ্ট যে কোনভাবেই শেষ হয়ে যাবে কিন্তু আখেরাতের ভয়াবহ অসহনীয় আযাব সহজে শেষ হবে না। আপনার বোনের কিন্তু সর্বদা যিনার গোনাহ হচ্ছে। আর আপনারা তাকে সেখানে পাঠিয়ে আপনারাও তার অংশীদার। তাই অতি দ্রুত যে কোন মূল্যে আপনার বোনকে সেখান থেকে ফিরিয়ে এনে তার ও নিজেদের পরিত্রাণের ব্যবস্থা করুন। হালালাহ ব্যতীত তার সাথে যতবারই বিবাহ দেওয়া হোক না কেন তা বাতিল গণ্য হবে।–সূরা বাকারাহ, আয়াত ২৩০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪৭৩; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৪০৯, ৪১০

Loading