প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম ১। হযরত আমি যদি প্রথম কাতারে থাকি এবং ইমাম সাহেব দাড়িয়ে কাতার সোজা করতে বললে দ্বিতীয় কাতারে অন্য একজন সুন্নত পড়ছে তার সামনে কোনো সুতরা নেই এখন আমি যদি কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে দাড়াই তাহলে যে নামায পড়ছে তার সামনে দিয়ে যেতে হবে এক্ষেত্রে আমার কি করা উচিত? কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাড়াবো না যে নামায পড়ছে তার জন্য সামনের কাতার একটু জায়গা রেখে দিব? ২। অনেক সময় চলাফেরা করতে পা দ্বারা অন্য কারো পায়ে লাথি লেগে যায় এই কারনে যার পা দ্বারা লাথি লাগছে সেই লোক যার পায়ে কিংবা শরীরের অন্য কোনো জায়গায় লাথি লাগছে সেই লোকের শরীরের কোনো এক জায়গায় হাত দ্বারা স্পর্শ করে মুখে চুমা খায়। এই জিনিস করলে কি গুনাহ হবে? না করতে হবে? ৩। নামায না পড়ার ভয়াবহতা সম্পর্কে কয়েকটি হাদীস দিলে উপকৃত হতাম।

উত্তর :

ওয়া আলাইকুমুস সালাম
১। এক্ষেত্রে কাতার সোজা করতে গিয়ে যদি তার সামনে দিয়ে অতিক্রম করা প্রয়োজন হয় তবে অতিক্রমকারীর কোন গুনাহ হবে না। বরং জামাআতের পূর্বে এভাবে (অর্থাৎ সুন্নাত চলাকালীন জামাআত শুরু হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকলে) কাতারের মধ্যে প্রবেশ করে সুন্নাত পড়া গুনাহের কাজ।–রদ্দুল মুহতার ৪/৪৯৩-৪৯৬; হাশিয়ায়ে তাহতাবী, পৃষ্ঠা ২৩২

২। এক্ষেত্রে দুঃখ প্রকাশ করাই যথেষ্ট। যেমন বললেন মাফ করবেন বা দুঃখিত ইত্যাদি।

৩। নিম্নে এমন কিছু হাদীস দেওয়া হল-
(ক) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন ঈমান ও কুফরীর মাঝে পার্থক্য হলো নামায ছেড়ে দেওয়া।–সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং ২৬১৮

(খ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন যে ব্যক্তির এক ওয়াক্ত নামায ছুটে গেল, তার থেকে যেন তার পরিবার-পরিজন ও ধনসম্পদ সবকিছুই কেড়ে নেওয়া হলো।–সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং ১৪৬৮

(গ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি নামাযের গুরুত্ব দেয় না কিয়ামতের দিন তার জন্য নামায নূর হবে না। তার কাছে কোনো দলিল থাকবে না। নাজাতের জন্য তার কোনো উপায়ও থাকবে না। এরূপ ব্যক্তির হাশর হবে ফেরাউন, হামান ও উবাই ইবনে খলফের সঙ্গে।-মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ৬৫৭৬

(ঘ) একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি স্বপ্নের কথা শুনালেন, তিনি বলেন আমাকে দুই ব্যক্তি সঙ্গে করে এক জায়গায় নিয়ে গেল। জাহান্নামে এক ব্যক্তিকে দেখলাম যে, তার মাথা পাথর দ্বারা আঘাত করে চূর্ণবিচূর্ণ করা হচ্ছে। এত জোরে পাথর মারা হচ্ছে যে, সে পাথর ছুটে গিয়ে দূরে পড়ছে, পুনরায় পাথর কুড়িয়ে আনতে আনতে মাথা আগের মতোই ঠিক হয়ে যাচ্ছে। পাথর এনে আবার আঘাত করা হচ্ছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাথী দুজনকে জিজ্ঞাসা করলেন এই লোকটি কে? তখন তারা বলল, এই ব্যক্তি কুরআন শরীফ শিক্ষা করে ছেড়ে দিয়েছিল এবং নামায না পড়ে ঘুমিয়ে যেত।–সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ১৩৮৬ (সংক্ষিপ্ত)

Loading