প্রশ্ন : সালাম জানাচ্ছি। আমি শফিকুল আলম। ধন্যবাদ আপনাকে আমার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য।(জাহাজে থাকা অবস্থায় কসর নামাযের ব্যাপারে হাদীসের আলোকে উত্তর দেওয়ার জন্য।) তবে একজন জানালেন যে, আমারা তো জাহাজে জামাআতে নামায পড়ছি না তবে ইকামতের কথা আসছে কেন? আর শুধু কি ইকামত না হওয়ার জন্য আমরা কসর নামায পড়বো?

উত্তর :

ওয়া আলাইকুমুস সালাম
আসলে পূর্বের উত্তরে ইকামাত বলতে নামাযের ইকামাত উদ্দেশ্য নয়। ইকামাত শব্দের অর্থ হচ্ছে অবস্থান করা। মুকীম শব্দটিও ইকামাত থেকে উদ্গত যা মুসাফিরের বিপরীতে ব্যবহৃত হয়। নিম্নোক্ত লিঙ্কের প্রবন্ধটিতে এ ব্যাপারে আপনি বিস্তারিত জানতে পারবেন-
http://muftihusain.com/article/%E0%A6%B8%E0%A6%AB%E0%A6%B0-%E0%A6%93-%E0%A6%95%E0%A6%B8%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4-%E0%A6%9C%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%80/
উক্ত লিঙ্কের বিষয়বস্তুর সামান্য কিছু নিম্নে দেওয়া হল-
ওয়াতনে ইক্বামতঃ
মাসআলাঃকেউ কমপক্ষে ৪৮ মাইল সফর করে কোন স্থানে গিয়ে কমপক্ষে ১৫দিন থাকার নিয়ত করলে তা তার জন্য ওয়াতনে ইক্বামত হিসাবে গন্য হবে। ১৫দিনের কম থাকার নিয়ত করলে ওয়াতনে ইকামত হবে না। -আল বাহরুর রায়েক ৪/৩৪১।
মাসআলাঃওয়াতনে ইক্বামত সফরের দ্বারা বাতিল হয়ে যায়। অর্থাৎ কেউ কোন স্থানে কমপক্ষে ১৫দিন থাকার পরে সেখান থেকে সফর করে (কমপক্ষে ৪৮মাইল দুরুত্ব অতিক্রম করে) চলে এলে তার ওয়াতনে ইক্বামত বাতিল হয়ে যায়। পরে কোন দিন উক্ত স্থানে পূনরায় গেলে ১৫ দিন থাকার নিয়ত ব্যতীত তা তার জন্য ওয়াতনে ইক্বামত হবে না। তবে নতুন করে আবার ১৫দিন থাকার নিয়ত করলে তা তার জন্য ওয়াতনে ইক্বামত হবে। -মারাকিল ফালাহ ১/১৮৭।
মাসআলাঃকেউ কোন স্থানে সফর করে গিয়ে কমপক্ষে ১৫ দিন থাকল। অতঃপর তার সামানপত্র সেখানে রেখে গিয়ে উক্ত স্থান থেকে চলে গেল। এর পর সেখানে ১৫দিনের কম থাকার নিয়তে গেলেও সে মুকীম গন্য হবে। তবে তার সামানপত্র সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে গেলে কমপক্ষে ১৫ থাকার নিয়ত ব্যতীত সে উক্ত স্থনে মুকীম গন্য হবে না।-বাদায়েউস সানায়ে ১/১০৪, আহসানুল ফাতাওয়া ৪/১০৮-১১২।
মাসআলাঃবিভিন্ন চাকুরীজীবী ও পেশাজীবীরা শহরে বাসা ভাড়া করে থাকে। তারা গ্রামের বাড়ীতে গেলেও বাসায় সামানপত্র রেখে যায়। কাজেই শহরে তারা মুকীম গন্য হবে। তবে এক্ষেত্রে একবার একটানা ১৫ দিন থাকা শর্ত। -আদ্দুরুরল মুখতার ১/১২৩।
মাসআলাঃকেউ দুই স্থান মিলে ১৫ দিন থাকার নিয়ত করল। তবে প্রতিদিন রাতে সে এক জায়গাতে থাকবে এবং দিনে অন্যত্র অবস্থান করবে।এমতাবস্থায় সে রাতের স্থানে মুকীম হবে এবং পুরো নামায পড়বে।কিন্তু যদি দিনের কর্মস্থল রাতের স্থান থেকে ৪৮ মাইল দুরত্বে হয় তবে দিনের স্থনে সে মুসাফির হবে এবং কসর করবে। আর যদি উভয় স্থানের দুরত্ব কমপক্ষে ৪৮মাইল না হয় তবে উভয় স্থানে পুরো নামায পড়বে। মোটকথা রাতে থাকার স্থান ধর্তব্য হবে। -রদ্দুল মুহতার ২/৬০৭(যাকারিয়া)।
ওয়াতনে ইক্বামতের হুকুমঃ
মাসআলাঃআলাঃ ওয়াতনে ইক্বামতে মুসাফির গন্য হবে না। বরং মুকীম গন্য হবে। এবং চার রাকাআত বিশিষ্ট ফরজ নামায চার রাকাআতই পড়বে। কসর জায়েয নেই। -আল বাহরুর রায়েক ৪/৩৪০-৩৪২।
উপরোক্ত প্রশ্নোত্তর মূলত একটি সম্পূরক প্রশ্নোত্তর। যা অন্য একটি প্রশ্নোত্তর থেকে সৃষ্টি হয়েছে। পাঠকদের জন্য উক্ত প্রশ্নোত্তরটি নিম্নে দেওয়া হল-
(প্রশ্ন : Ami seaman, ami iran achi, ami ship job kori. Amar jonno namaj kosor keno? Ami ৬ months er jonno aschi job korte. Ship ay thaki, khawa, ghum sob e ship a hoy. Amar ship ak port theke onno port jawa asha kore. Kono port a ১৫ days thakena. Akhon ami ki namaj porbo? Kosor naki puro namaj. Karo kache sothik tottho pacchi na. Amake sothik poth dekhale uopkrito hobo.
উত্তর : এখানে দুটি বিষয়। পুরো নামায পড়তে হলে কোন একটি জায়গায় কমপক্ষে ১৫ দিন থাকার নিয়ত করতে হবে এবং স্থানটি ইকামাতের নিয়ত সহীহ হবার উপযুক্ত হতে হবে। নদি বা সুমুদ্রের মাঝে ইকামাতের নিয়ত করলে তা সহীহ হয় না। আর আপনার প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনি সফররত অবস্থায় যেহেতু কোন স্থানে কখনো ১৫ দিনের নিয়ত করেননা তাই পুরো সফরে কসর-ই করবেন। তবে যদি কখনো জাহাজ বা নৌযান শহর বা উপশহরের কিনারায় ১৫ দিন বা তদাপেক্ষা বেশী থাকার নিয়তে ভিড়ানো থাকে সেক্ষেত্রে আপনি মুকীম গন্য হবেন এবং পূরো নামায পড়বেন। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৯; বাদায়েউস সানায়ে ১/৯৮)

Loading