প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম। ১। এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন নামায ছেড়ে দিয়েছে। হুট করেই একদিন তার মনে হল নামায ছাড়া ঠিক হচ্ছে না। সে নিয়ত করল আর কখনো নামায ছাড়বে না এবং পরদিন থেকে নামায ধরে ফেলল। প্রশ্ন হচ্ছে, এভাবে নামায ধরে ফেললেই কি চলবে? নাকি আনুষ্ঠানিক তাওবা করে তারপর নামায ধরতে হবে? ২। আমাদের সমাজে অধিকাংশ মানুষ সাপ্তাহিক মুসল্লী। শুধু জুমার নামায পড়ে। সারা সাপ্তাহ নামায ছেড়ে দিয়ে তাওবা ছাড়া শুধু জুমার নামায পড়লে তাদের এই নামায কী সহীহ্ হবে? ৩. আমি অনেককে দেখি, যারা সালাত আদায়ে ধারাবাহিক না। যেমন, সামান্য একটু ব্যস্ততার কারণে যোহর নামাজ ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দিল। তারপর যোহরের সালাত কাযা না করে আসর পড়ে ফেলল। মাগরিবও পড়ল। আবার এশা পড়ল না। পরদিন ফজর পড়ল। মাঝাখানে যে সালাত গুলি সে ছেড়ে দিচ্ছে তা আর কাযা আদায় করছে না। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এভাবে সালাত আদায় করলে ওই ব্যক্তি যেই যেই ওয়াক্ত আদায় করতেছে তা কি সহীহ্ হচ্ছে? ৪. ইচ্ছাকৃতভাবে ফজরের সালাত ছেড়ে দিয়েছি। এখন যোহরের আগে ফজরের কাযা পড়ে যোহর পড়লেই চলবে, নাকি যোহরের আগে তাওবা করা জরুরী? উল্লেখ্য, ফজরের সলাত ছেড়ে দেয়ার পর মনে মনে অনুতপ্তও হয়েছি।

উত্তর :

ওয়া আলাইকুমুস সালাম
১। নামায সে তাওবা করুক বা না করুক উভয় অবস্থায় শুরু করে দিতে পারে। তবে পূর্বের নামায ছেড়ে দেওয়ার গুনাহ মাফ করিয়ে নেওয়ার জন্য তাওবার পাশাপাশি সেগুলো ক্বাযা করে নেওয়া জরুরী। তাওবার কোন আনুষ্ঠানিকতা নেই তবে এর তরীকা রয়েছে। এর তরীকা হল, সে পূর্বের ভুলের জন্য অনুতপ্ত হয়ে খালেছভাবে আল্লাহ তাআলার নিকট তাওবা করবে। ভবিষ্যতে এমনটি আর করবে না এই মর্মে পাক্কা ইরাদা করবে। এর পাশাপাশি পূর্বের ছেড়ে দেওয়া নামাযগুলো হিসাব করে ক্বাযা করে নিবে।–সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ৫৯৭; ফয়যুল বারী ৪/২২৬
২। হ্যাঁ, নামায তো হয়ে যাবে। তবে অন্যান্য নামায ছেড়ে দেওয়ার স্বতন্ত্র গুনাহ হবে।
৩। যদি সে সাহেবে তারতীব না হয় অর্থাৎ তার জিম্মায় ছয় বা তার চেয়ে বেশি ওয়াক্ত নামায ক্বাযা না থাকে তবে সহীহ হবে। নিম্নোক্ত লিঙ্কে আপনি এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন-
http://muftihusain.com/ask-me-details/?poId=1557
৪। হ্যাঁ, ক্বাযা পড়লে তা আদায় হয়ে যাবে। তবে ইচ্ছাকৃত নামায ছেড়ে দেওয়ার কারনে যে গোনাহ হয়েছে তা মাফ হবার জন্য ক্বাযার পাশাপাশি তাওবা করাও জরুরী। আর বিনা কারনে তাওবা বিলম্ব করা উচিত নয়।

Loading