প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম ১) আমাদের পরিবারের টাকা আমার আম্মুর কাছে দিয়ে দিই, পরিবারের খরচার পরেও ৭০,০০০/- টাকা আম্মুর কাছে জমা আছে। এখানে আমার এবং আমার আব্বুর টাকাও আছে। আলাদা আলাদা হিসাব করলে আমাদের কারোই নিসাব পরিমান টাকা হয় না। এমতাবস্থায় আমাদের কি যাকাত ফরজ হবে ? যাকাত যদি ফরজ হয়ও তো কার উপর হবে- আমার, বাবার, নাকি আম্মুর ? কোরবানীও কি ওয়াজিব হবে ? ২) নামাযের মধ্যে বড় সূরা পড়ার সময় ভুলে এক দুই আয়াত গ্যাপ হয়ে যাওয়ার পর মনে পরলে সেক্ষেত্রে কি নামায নতুন ভাবে পড়তে হবে ? ৩) নামাযের মধ্যে সুরা পড়ার সময় ভুলে এক সুরা থেকে অন্য সুরায় (সাদৃশ্যপূর্ন আয়াত হওয়ার কারণে) চলে গেলে সেক্ষেত্রে কি করনীয় ? ৪) নামাযের মধ্যে বড় সুরা পড়ার সময় পরের আয়াত স্মরনে না আসলে কি করনীয় ? ৫) মৃত ব্যক্তির চল্লিশার জন্য কেউ যদি দাওয়াত দেয়, তাহলে সেই দাওয়াতে যাওয়া এবং খাওয়া কি জায়েয ? মীলাদের তোবারক খাওয়া যাবে ? ৬) আর হিন্দুরা দাওয়াত দিলে যাওয়া ও খাওয়া যাবে কি ?

উত্তর :

ওয়া আলাইকুমুস সালাম
তানকীহ (প্রশ্ন স্পষ্টকরণ): উক্ত টাকার মালিক কে? আপনার আম্মুকে টাকাগুলো হাদিয়া হিসেবে দিয়েছেন নাকি আমানত? আপনার, আপনার আব্বার এবং আপনার আম্মার অন্য কোন সম্পদ(সোনা, রূপা বা ব্যবসার মাল ইত্যাদি) বা প্রয়োজন অতিরিক্ত সম্পদ আছে কিনা? এগুলো জানার পরেই আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে ইংশাআল্লাহ।
তানকীহের উত্তরঃ আসসালামু আলাইকুম,
উত্তরটা একটু তাড়াতাড়ি দিলে উপকার হতো, কারণ সামনে কোরবানী- আপনার উত্তরের পর বুঝা যাবে যে এবার কোরবানী করবো কি করবো না? মানুষের সেবার জন্য আল্লাহ তাআলা আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। উক্ত টাকা সংসার চালানোর জন্যই আম্মুকে দেয়া হয়েছে (আমরা উক্ত টাকা ফেরত চাইবো না)। সেকেনহ্যান্ড একটি ফ্রিজ আছে- চার বছর আগে কিনেছিলো ১০,০০০ (দশ হাজার) টাকায় আর তেমন কিছু নেই।
মূল উত্তরঃ ওয়া আলাইকুমুস সালাম
(১) প্রশ্ন থেকে বুঝে আসে উক্ত টাকার মালিক মূলত আপনার আম্মু। এমতাবস্থায় আপনার আম্মুর উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে।-রদ্দুল মুহতার ৬/৩১২
(২) না, নতুনভাবে পড়তে হবে না এবং সিজদায়ে সাহুও দিতে হবে না।–রদ্দুল মুহতার ১/৫৪৬; আন নাহরুল ফায়েক ১/২৩৭।
(৩+৪) এক্ষেত্রে সূরা ফাতেহার পর যদি ছোট তিন আয়াত বা বড় এক আয়াত পরিমান পড়া হয়ে যায় তবে রুকু করে নামায শেষ করবে। অন্য সূরা শুরু করবে না। আর যদি উল্লেখিত পরিমান পড়া না হয় তবে বিসমিল্লাহ্‌সহ অন্য সূরা পড়ে নামায শেষ করবে।–রদ্দুল মুহতার ১/৬২২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৭৯।
(৫) না, চল্লিশায় যাওয়া ও খাওয়া জায়েয হবে না।– মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ৬৯০৫; ফাতহুল কদীর ২/১৪২; বাযযাযিয়া ৪/৮১।

মৃত ব্যক্তিকে ছাওয়াব পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে কোন কিছু পড়লে বা দুআ করলে এর বিনিময়ে যে তোবারক দেওয়া হয় তা গ্রহন করা নাজায়েয। তবে দুনিয়াবী কোন প্রয়োজনে কিছু পড়লে বা দুআ করলে এর বিনিময়ে যে তোবারক দেওয়া হয় তা গ্রহন করা জায়েয।–সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ৫৭৪৯; রদ্দুল মুহতার ৬/৫৬; মাজমাউল আনহুর ২/৩৮৪।
(৬) তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং আন্তরিক মহব্বত রাখা হারাম। তাই একান্ত অপারগতা ব্যতীত তাদের দাওয়াত গ্রহন না করা চাই।–সূরা মায়েদাহ, আয়াত ৫১,৫৭;ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৪৮।

Loading