প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম।আমি এস এস সি পরীক্ষার আগে থেকে প্রায় নিয়মিত নামাজ পড়ি।এখন ভার্সিটিতে অনার্স সেকেন্ড ইয়ার প্রায় শেষ।এর মধ্যে দাড়িও রাখছি।কিন্তু সমস্যা হলো এতদিনে ফজর নামাজ খুব কম পড়ছি।ইন্টারমিডিয়েটে বিভিন্ন অসুস্থতার কারনে খুব বেশী ঘুম পাড়তাম।দিনে ৯\১০\১১ ঘন্টা।যার কারনে আগে ঘুমালেও উঠতে অনেক দেরী হত।এখনও অনেক বেশী ঘুমাই।৯\১০ ঘ্ন্টা।যার কারনে প্রতিদিন এলার্ম দেয়া থাকলেও বেশিরভাগ দিন উঠতে পারিনা।সকালে উঠে নামাজ পড়ি।অনেক চেস্টাতেও হচ্ছেনা।আমার প্রশ্ন হলো আমি মুনাফিক কিনা?(২)আমি নামজ পড়ি আবার মাঝে মাঝে গান শুনি, নাটক দেখি, এটা ইসলামের দৃস্টিতে কিরুপ।ব্যাখ্যা করলে সুবিধা হতো।এগুলা বাদ দেয়া কতটা জরুরি?

উত্তর :

ওয়া আলাইকুমুস সালাম
১। নামাযের ব্যাপারে খুবই যত্নবান হোন। ইশার পরপরই ঘুমিয়ে পড়ুন। এভাবে নিয়মিত নামায ছেড়ে দেওয়ার দ্বারা যে, আপনার থেকে কাফেরদের মত কাজ প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে এতে কোন সন্দেহ নেই। আর নামায ছেড়ে দেওয়ার ভয়াবহতা সম্পর্কিত নিম্নলিখিত হাদীসগুলো বার বার দেখতে থাকুন।
(ক) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন ঈমান ও কুফরীর মাঝে পার্থক্য হলো নামায ছেড়ে দেওয়া।–সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং ২৬১৮
(খ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন যে ব্যক্তির এক ওয়াক্ত নামায ছুটে গেল, তার থেকে যেন তার পরিবার-পরিজন ও ধনসম্পদ সবকিছুই কেড়ে নেওয়া হলো।–সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং ১৪৬৮
(গ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি নামাযের গুরুত্ব দেয় না কিয়ামতের দিন তার জন্য নামায নূর হবে না। তার কাছে কোনো দলিল থাকবে না। নাজাতের জন্য তার কোনো উপায়ও থাকবে না। এরূপ ব্যক্তির হাশর হবে ফেরাউন, হামান ও উবাই ইবনে খলফের সঙ্গে।-মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ৬৫৭৬
(ঘ) একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি স্বপ্নের কথা শুনালেন, তিনি বলেন আমাকে দুই ব্যক্তি সঙ্গে করে এক জায়গায় নিয়ে গেল। জাহান্নামে এক ব্যক্তিকে দেখলাম যে, তার মাথা পাথর দ্বারা আঘাত করে চূর্ণবিচূর্ণ করা হচ্ছে। এত জোরে পাথর মারা হচ্ছে যে, সে পাথর ছুটে গিয়ে দূরে পড়ছে, পুনরায় পাথর কুড়িয়ে আনতে আনতে মাথা আগের মতোই ঠিক হয়ে যাচ্ছে। পাথর এনে আবার আঘাত করা হচ্ছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাথী দুজনকে জিজ্ঞাসা করলেন এই লোকটি কে? তখন তারা বলল, এই ব্যক্তি কুরআন শরীফ শিক্ষা করে ছেড়ে দিয়েছিল এবং নামায না পড়ে ঘুমিয়ে যেত।–সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ১৩৮৬ (সংক্ষিপ্ত)

২। প্রশ্নে বর্ণিত প্রত্যেকটি কাজই কবীরাহ গুনাহ। যার একটি গুনাহই জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। কাজেই এগুলো থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেকটি মুসলমানের অত্যন্ত জরুরী। আল্লাহ তাআলা বলেন “হে ঈমানদারেরা, তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর”।–সূরা বাকারাহ, আয়াত ২০৮
আপনি আরো জানতে নিম্নোক্ত লিঙ্কটিও ভিজিট করতে পারেন-
http://muftihusain.com/ask-me-details/?poId=1199

Loading