প্রশ্ন : আমি কি আমার শেয়ার ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারব? উল্লেখ্য যে, আমি নিজের টাকায় ব্যবসা করি ব্যাংক ঋণের দ্বারা নয় এবং আমি হালাল কোম্পানিতে ইনভেষ্ট করি।

উত্তর :

আপনি যেহেতু বাংলা জানেন তাই সর্বসাধারণের উপকারার্থে উত্তরটি বাংলায় দেওয়া হল।

কোম্পানীর প্রডাক্ট বা কারবার বৈধ হলেও বর্তমান শেয়ার বাজার শরয়ী দৃষ্টিকোন থেকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ব্যবসার বিপরীতে এর মধ্যে জুয়ার দিকটিই অগ্রগণ্য। শেয়ার বেচাকেনা মূলত ওলামায়ে কেরাম শর্তসাপেক্ষে জায়েয বলেছিলেন যেহেতু এটা আনুপাতিক হারে কোম্পানীর নির্দিষ্ট অংশের মালিকানার প্রতিনিধিত্ব করে। কিন্তু বর্তমানে এই প্রতিনিধিত্ব এতটাই ক্ষীণ যে, মূল বেচাকেনার সাথে এর সম্পর্ক অনেক অনেক দূরের। যা স্টক এক্সচেঞ্জ এ একাধিকবার প্রমাণিত হয়েছে এবং এদেশের মানুষ সর্বস্ব হারিয়েই চলছে। যদি সম্পর্ক দূরের না হত তবে যে কোম্পানী এখনো অস্তিত্ব লাভ করেনি বা যে কোম্পানীর হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ খেলাপি রয়েছে বা যে কোম্পানী বছরের পর বছর শেয়ার হোল্ডারদেরকে লভ্যাংশ দিতে পারে না শুধুমাত্র বোনাস শেয়ার দেয় তার শেয়ারের মূল্য হু হু করে ফেস ভেলুর বিশ/ত্রিশ গুন হতে পারতো না। আসলে বর্তমান শেয়ার বাজার মূলত কিছু সিন্ডিকেটর ও জুয়াড়ির হাতে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। তাছাড়া শেয়ার ক্রয় করলে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় সূদের সাথে জড়িয়ে যেতেই হয়। তাই সকল মুমিনের জন্য শেয়ার বাজারে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকা কর্তব্য।
কেউ শেয়ার বিক্রি করতে চাইলে যদি উক্ত কোম্পানীর সমস্ত সম্পদ তরল আকারে থাকে অর্থাৎ তারা এখনো কোন ইনভেস্টমেন্টে না নেমে থাকে তবে তাদের শেয়ার ফেস ভেলুর চেয়ে কমে বা বেশীতে বিক্রি করা জায়েয নেই। কমে বা বেশীতে করলে স্পষ্ট সূদী কারবার হবে। আর যদি কোন কোম্পানী আংশিক ইনভেস্টমেন্টে নেমে থাকে তবে তার শেয়ারের আনুপাতিক হারে যে অংশে উক্ত ইনভেস্ট পড়বে তার চেয়ে কমে উক্ত শেয়ার বিক্রি করা জায়েয নেই। তবে এক্ষেত্রে বেশিতে বিক্রি করা জায়েয আছে। যেমন কোন কোম্পানীর দশ টাকার দশটি শেয়ার রয়েছে। এখন উক্ত কোম্পানী যদি পঞ্চাশ টাকার কোন সম্পদ কিনে থাকে তবে উক্ত শেয়ারকে পাঁচ টাকার কমে বিক্রি করা জায়েয নেই। বেশিতে করা যাবে। – সূরা মায়েদাহ, আয়াত ৯০; সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ৫৯৬২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪১৭৬; সুনানে বাইহাকী, হাদিস নং ২০৭৩৩।
এ বিষয়ে ভবিষ্যতে বিস্তারিত লিখব ইংশাআল্লাহ।

Loading