প্রশ্ন : আমার বাবারা দুই ভাই ও তিন বোন। তারা মোটামুটি ৭২ শতাংশ জায়গা পাবে। তারা সকলে নিয়ত করেছে এই জায়গা তিন ভাগ করে দুই ভাই দুই ভাগ নিবে এবং এক ভাগ তিন বোন পুনরায় তিন ভাগ করে নিবে। এতে যদি সবাই সম্মত থাকে তবে তা জায়েয হবে কি? উল্লেখ্য, আমার দাদা দাদী নানা নানী কেউই বেচে নেই এবং পুরোটাই আমার দাদার সম্পত্তি। জাযাকাল্লাহু খাইরন।

উত্তর :

আল্লাহ তাআলার নির্ধারিত বণ্টন পদ্ধতি না মেনে ভিন্ন পদ্ধতি তারা কেন বাস্তবায়ন করতে চাইছে? আল্লাহ তাআলার সম্পদ বণ্টনের নীতিমালা কি অসম্পূর্ণ? নাকি তাদের তা পছন্দ হচ্ছে না? এটা কি অবাধ্যতা নয়? বর্তমানে মানুষের মাঝে এই প্রবণতা খুবই বেশী। সবাই বোনদেরকে ঠকাতে চায়। এখানে আপনার দাদার আর কোন ওয়ারিশ না থেকে থাকলে সম্পদ মোট সাত ভাগে ভাগ করা হবে। বোনেরা এক ভাগ করে তথা ১০.২৮ শতাংশ করে পাবে। আর ভাইয়েরা দুই ভাগ করে তথা ২০.৫৭ শতাংশ করে পাবে।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বোনেরা সামাজিকতা বা চক্ষুলজ্জার জন্য পৈত্রিক সম্পত্তি আংশিক বা পূরো ছেড়ে দেয়। এক্ষেত্রে তাদের অন্তরের সন্তুষ্টি মোটেই থাকে না। ভাইয়ের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য তারা এমনটি করতে বাধ্য হয়। ভাইয়েরা তাদের প্রাপ্য অংশ পরিপূর্ণভাবে বুঝিয়ে দিয়ে দেখুক বোনেরা তাদের অংশ নেয় নাকি ফিরিয়ে দেয়? ভাইয়েরা সাধারণত সম্পদ বন্টনের সময় বোনদের বঞ্চিত করার জন্য বলে থাকে ওরা তো আমাদের কাছেই আসবে। আমাদেরকেই তো ওদের দেখাশুনা করতে হবে, আত্মীয়তা বজায় রাখতে হবে। ওরা ওদের সম্পদ নিয়ে গেলে কোথায় এসে উঠবে? একথা বললে বোন কি করে সম্পদ নিবে? কারণ কোন বোনই চাইবে না তার বাপ দাদার ভিটা-বাড়িতে তার আসা যাওয়া বন্ধ হোক। তাছাড়া শশুর বাড়িতে কোন সমস্যা হলে ভাইয়েরাই তো মেয়েদের জন্য শেষ ঠিকানা হয়।

তাই বোনকে তার সম্পদ আসলেই দিতে চাইলে তার প্রাপ্য তাকে খুশি মনে হস্তান্তর করে দিবে এবং বলবে তুমি তোমার সম্পদ খুশিমনে গ্রহণ কর আমি বা আমরা যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাব। এমনটি করলে হয়তোবা বোনেরা তাদের সম্পদ কখনো ছাড়বে না। এর পরেও যদি বোনেরা কিছু অংশ ভাইকে স্বেচ্ছায় খুশি মনে দেয় তবে সে তা গ্রহণ করতে পারে।–সূরা নিসা, আয়াত ১১

সম্পূরক প্রশ্নঃ হুজুর আপনার উত্তরটি পেয়েছি। আমরা আপনার বলে দেয়া আল্লাহ তাআলার বন্টন পদ্ধতি অনুসরণ করবো। কিন্তু বোনেরা যদি ১০ নিয়ে খুশি মনে .২৮ হিসাবের সুবিধার জন্য বাদ দেয় তবে তা ঠিক হবে কি? কারণ .২৮ হিসাব একটু ঝামেলার। জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তরঃ বণ্টন নিয়ম মতই করবেন যাতে আল্লাহ তাআলার হুকুমের উপর পরিপূর্ণভাবে আমল হয়ে যায়। পরবর্তীতে ভাই বা বোন যদি সেচ্ছায় কিছু অংশ ছেড়ে দেয় তবে কোন সমস্যা নেই। বোন যেমনিভাবে ছাড়তে পারে তেমনিভাবে ভাইও তো .৫৭ অংশ ছেড়ে দিয়ে উদারতার নজীর প্রতিষ্ঠা করতে পারে।

Loading